Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

আমের প্রতি ভালোবাসা : আমের সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা

আম একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় সুস্বাদু ফল। স্বাদে, গন্ধে, বর্ণে ও পুষ্টিমানে আমের বিকল্প শুধু আম তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয়। আম সাধারণত কাঁচা, পাকা এমনকি ফ্রোজেন অবস্থায়ও খাওয়া যায়। এছাড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে আম থেকে আমসত্ত্ব, জুস, পিওরি, আচার, চাটনি এসব তৈরি করা যায়। ফল হিসেবে খাওয়ার পাশাপাশি আইসক্রিম, বেকারি পণ্য ও কনফেকশনারিতেও পাকা আম ব্যবহার হয়ে থাকে। আমে প্রচুর পরিমাণ আঁশ, ভিটামিন সি, প্রো ভিটামিন এ, ক্যারোটিন ও বিভিন্ন প্রকার পলিফেনল নামক উপাদান থাকে। বাংলাদেশে মূলত রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, যশোর, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও পার্বত্য জেলাগুলো বাণিজ্যিকভাবে আমের চাষ হয়। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ মে. টন আম উৎপাদিত হয়। উৎপাদিত আম এসব এলাকা থেকে সারা দেশেই আম সাপ্লাই হয়ে থাকে। আমে রয়েছে উচ্চ জলীয় অংশ এবং নরম গঠন ফলে খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমের পচন রোধে অস্বাদু ব্যবসায়ীরা ধাবিত হচ্ছে রাসায়নিক ব্যবহারের দিকে। আমের পুষ্টিমান ও গুণাগুণ বজায় রেখে কিভাবে নিরাপদ আম ভোক্তার কাছে পৌঁছানো যায় সে লক্ষ্যে আম বাগান থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত প্রতিটা ধাপেই বিজ্ঞানভিত্তিক বিশেষ ব্যবস্থাপনা ও কৌশল অবলম্বন করা উচিত। এভাবেই আমের সংগ্রহোত্তর ক্ষতি কমানো সম্ভব।
আমের জাত
আমাদের দেশে জনপ্রিয় কতগুলো আমের জাত রয়েছে যেমন- গোপালভোগ, ল্যাংড়া, হাঁড়িভাঙা, ক্ষীরসাপাতি, হিমসাগর, ফজলি ও আশ্বিনা এসব। এ জাতগুলো ইদানীং বাণিজ্যিকভাবেও চাষাবাদ হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারি থেকে অদ্যবধি ১১টি বিশেষ বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন আমের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এদের মধ্যে বারি আম-২, বারি আম-৩, বারি হাইব্রিড আম-৪ উল্লেখযোগ্য।
আমের সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব
বাগান থেকে আম ভোক্তার কাছে যেতে পরিমাণের পাশাপাশি গুণেমানেরও অপচয় হয়ে থাকে। এক গবেষণায় আছে আমের সংগ্রহোত্তর অপচয় প্রায় ৩১%। এসব অপচয়গুলো মূলত গাছ থেকে আম সংগ্রহের ভুল পদ্ধতি, রুক্ষভাবে ফল হ্যান্ডলিং, অনুন্নত প্যাকেজিং ও পরিবহন ব্যবস্থাপনার কারণে হয়ে থাকে। গাছে থাকা অবস্থায় ফলের রোগ ও পোকামাকড় দমনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাবেও সংগ্রহ পরবর্তী পর্যায়ে অ্যানথ্রাকনোজ ও বোঁটার গোড়া পচা রোগে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। নিরাপদ খাদ্য ও খাদ্যের গুণগতমান সম্পর্কে ভোক্তাদের সচেতনতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভোক্তাদের কাছে ভালো গুণাগুণসম্পন্ন উচ্চমানের নিরাপদ আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং এজন্য তারা অতিরিক্ত মূল্য দিতেও প্রস্তুত। ভোক্তার পরিবর্তিত রুচি ও জীবনযাত্রার মানের সাথে সঙ্গতি রেখে ফলের যথাযথ সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। ক্রেতাদের ভালো গুণাগুণসম্পন্ন নিরাপদ ফলের চাহিদা পূরণের জন্য আমের সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনার ওপর আরও বেশি মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।
আম ফলের পরিপক্বতার পর্যায়
পরিপক্ব আমের খোসা ও শাঁসে সুন্দর রঙ ধারণ করে এবং পাকার পরে ফলের মিষ্টি গন্ধ ও পরিপূর্ণ স্বাদ পাওয়া যায়। আমের পরিপক্বতা নিরুপণের ক্ষেত্রে- ফলের আকৃতি বোঁটা সংলগ্ন আমের কাঁধ মোটামুটি সমান হয়ে যাবে এবং ফলের পার্শ্বদেশ পুষ্ট হবে; খোসার প্রকৃতি আমের খোসার ওপর সাদা পাউডারের মতো আবরণ পড়বে; খোসার বর্ণ গাঢ় সুবজ থেকে পরিবর্তিত হয়ে হালাকা সুবজ বর্ণ ধারণ করবে এবং শাঁসের খোসা ফলের শাঁস হালকা ক্রিম থেকে হলুদ বর্ণ ধারণ করবে।
আম সংগ্রহের উপযুক্ত সময়
পরিপক্ব আম গাছ থেকে সংগ্রহ করার অনুমোদিত উপযুক্ত সময় হলো সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে আম পাড়লে আমের কষ কম বের হয়। মনে রাখতে হবে, বৃষ্টি হওয়ার পর পরই আম সংগ্রহ করা ঠিক নয়।
আম সংগ্রহের পদ্ধতি
সাধারণত ঠুসির সাহায্যে গাছ থেকে আম সংগ্রহ করা উচিত। একটি চিকন লম্বা বাঁশের মাথায় নেটের ব্যাগ দিয়ে ঠুসি তৈরি করা হয়। গাছের শাখা থেকে ঠুসির সাহায্যে আম সংগ্রহ করে সরাসরি সংগ্রহ পাত্রে স্থানান্তর করা যায়। সংগ্রহ পাত্রটিতে পরিষ্কার প্লাস্টিক বা চটের বস্তা লাইনার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে যাতে ফলের গায়ে ক্ষত সৃষ্টি না হয়। মাঠে ফল সংগ্রহের পাত্র হিসেবে প্লাস্টিক ক্রেট-ই উত্তম। জীবাণু দ্বারা সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষার জন্য সংগ্রহের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং ফল সংগ্রহের পাত্র অবশ্যই পরিষ্কার-পরিছন্ন থাকতে হবে।
- গাছ থেকে আম পাড়া এবং বাগানে আম হ্যান্ডলিংয়ের সময় ফলের অপচয় ও অবনতি কমানোর কলাকৌশল-
- অনুজীবের অনুপ্রবেশ ও সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য আম পাড়ার আগে শ্রমিকদের হাতমুখ অবশ্যই ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
- ফলের গায়ে যাতে কষ লেগে না যায় সেজন্য ২-৩ সেন্টিমিটার বোঁটাসহ আম পাড়তে হবে।
- ক্ষত থেকে আমকে রক্ষার জন্য সংগ্রহপাত্রের ভেতরে দিকে পরিষ্কার প্লাস্টিক, চটের বস্তা বা পুরনো খবরের কাগজ বিছিয়ে নিতে হবে।
- ছিদ্র বা ক্ষতযুক্ত আম অবশ্যই আলাদা করে নিতে হবে।
- আম ভর্তি পাত্র অত্যন্ত যতেœর সাথে মাটিতে রাখতে হবে। কোনোভাবেই সংগৃহীত আম সরাসরি মাটির ওপর ঢালা যাবে না। মাটির সংস্পর্শে এলে ফলগুলো অনুজীব দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। এজন্য মাটিতে পাতলা ত্রিপল অথবা মোটা কাপড় বিছিয়ে তার ওপর সংগৃহীত আম ঢালতে হবে।
- সংগৃহীত আমগুলোকে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে।
আমের সংগ্রহোত্তর কার্যক্রম
১. ছাঁটাইকরণ বা ট্রিমিং : আমের ছাঁটাইকরণ বলতে ফলের সাথে লেগে থাকা বোঁটার ১ সেমি. রেখে বাড়তি অংশ কেটে ফেলতে হবে।
২. আমের কষ অপসারণ : তাজা কষ আম থেকে বের করে দেয়াকে কষ অপসারণ বলে। কাজটি করার জন্য সাধারণত একটি ধারালো পরিষ্কার কাঁচি বা প্রুনিং শেয়ারের সাহায্যে ফলের বোঁটা আমের কাঁধ বরাবর কেটে ফেলতে হবে। অতঃপর বোঁটা ছাঁটাইয়ের পর আমগুলোকে বিশেষভাবে তৈরি একটি প্লাস্টিক বা স্টিলের জালযুক্ত যাকের ওপর উপুর করে ৩০ মিনিটের জন্য রাখতে হবে, যাতে কষ ভালোভাবে বের হয়ে যায়। কখনই চট বা বস্তার ওপর আম উল্টা করে রাখা যাবে না। এতে ফলের গোড়ার অংশে কষ লেপটে যাবে। তাছাড়া বোঁটা ছাঁটাইয়ের সাথে সাথে আমগুলোকে ১% ফিটকিরির দ্রবণে (৫০ লি. পানিতে ৫০০ গ্রাম ফিটকিরির পাউডার মেশাতে হবে) ১ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে। ফিটকিরি আমের কষকে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে ক্রেটে ফল ভরে ক্রেটসহ আমকে ফিটকিরির দ্রবণে ডুবিয়ে দিতে হবে। অতঃপর ১ মিনিট পর ফলগুলো তুলে গায়ের পানি শুকিয়ে নিয়ে প্যাকেট করতে হবে।
 ৩. সর্টিং বা গ্রেডিং : আম সংগ্রহের পর গুণগতমানের ওপর ভিত্তি করে আমগুলোকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করতে হবে। ভালো গুণাগুণসম্পন্ন নিরাপদ আমগুলো পরিপক্ব, উত্তম গঠন বিশিষ্ট, পরিষ্কার, রোগ ও পোকামাকড় মুক্ত এবং যান্ত্রিক ক্ষত যেমনÑ কাটা ছিদ্র, থেঁতলানো ইত্যাদি মুক্ত হতে হবে। এছাড়াও ফলগুলো অনুজীব, রাসায়নিক এবং বাহ্যিক দূষণ মুক্ত হতে হবে। অন্যদিকে ত্রুটিযুক্ত (ফলের সিসিড ফ্লাই, ফ্রুট ফ্লাই এবং থ্রিপস আক্রান্ত আম;) ফল সংগ্রহের পূর্বে গাছে থাকা অবস্থায় সৃষ্ট ক্ষত যেমন- স্ক্যাব কিংবা সুটি মোল্ড আক্রান্ত আম; ফল সংগ্রহ ও পরবর্তী হ্যান্ডলিংজনিত ক্ষত যেমন- কষের দাগ, থেঁতলানো, ঘর্ষণ ও চাপজনিত ক্ষত, কাটা ও ছিদ্রযুক্ত আম এবং অপরিপক্ব অবস্থায় পাকানো) আমগুলো সাধারণত বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।
সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে আমের রোগ নিয়ন্ত্রণ
সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে আমের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ রোগ হলো অ্যানথ্রাকনোজ ও স্টেম অ্যান্ড রট। সুবজ থাকা অবস্থায় আমে এ দুইটি রোগ শনাক্ত করা যায় না। শুধুমাত্র ফল পাকার পর এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। আমের সংগ্রহ পূর্ব এবং সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রোগ দুইটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। রোগ দুইটি দমনের জন্য গরম পানিতে আম শোধন করা সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। গরম পানিতে শোধনের ক্ষেত্রে সবুজ পরিপক্ব আমকে ৫২-৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় জাতভেদে ৫-১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হয়। এ তাপমাত্রা সীমার মধ্যে রোগের জীবাণু মারা যায় কিন্তু ফলের কোনো ক্ষতি হয় না। যদি পানির তাপমাত্রা ৫২ ডিগ্রি সে. এর নিচে নেমে যায় তবে এ পদ্ধতির কার্যকারিতা কমে যায়। আবার তাপমাত্রা ৫৫ ডিগ্রি সে. এর ওপরে উঠে গেলে আমের চামড়া-খোসা ঝলসে যায়। কাজেই সঠিকভাবে আম শোধনের জন্য পানির তাপমাত্রা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে বজায় রাখা আবশ্যক।
আম প্যাকেজিং ও পরিবহন
১. প্যাকেজিং : পরিবহন ও পরবর্তী হ্যান্ডলিং কার্যক্রমের সময় ফলের গুণগতমান বজায় রাখার জন্য যথাযথভাবে প্যাকেজিং করা আবশ্যক। প্যাকেজিং উপাদান এমন হতে হবে (শক্ত কনটেইনার যেমন- প্ল­াস্টিক ক্রেট, বাঁশের ঝুড়িও, কার্টন বা ফাইবার বোর্ডের বাক্স) যা প্যাকেটের ভেতরের পণ্যকে পর্যাপ্ত সুরক্ষা দেবে, সহজভাবে হ্যান্ডলিং করা যাবে, ভোক্তার কাছে আকর্ষণীয় হবে এবং ভেতরের পণ্য সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য ভোক্তার জ্ঞাতার্থে লিপিবদ্ধ করা যাবে। প্ল­াস্টিক ক্রেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়াবলি-পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা : প্রতিবার ব্যবহারের পর সাবান কিংবা ডিটারজেন্ট দিয়ে ক্রেটগুলোকে পরিষ্কার করতে হবে, হ্যান্ডলিং : পরিবহনে পণ্যসহ ক্রেটগুলো উঠনো, সাজানো এবং নামানোর সময় সতর্কতার সাথে নাড়াচাড়া করতে হবে। ক্রেটগুলোকে কোনোভাবেই ওপর থেকে ফেলা যাবে না এবং সর্টিং-গ্রেডিংয়ের সময় খালি ক্রেটগুলোকে বসার সিট হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না।
ক্রেট গুদামজাতকরণ : খালি ক্রেটগুলোকে পরিষ্কার জায়গায় রাখতে হবে যাতে পোকামাকড় ও ইঁদুর এগুলোর ক্ষতি করতে না পারে। এছাড়া রাসায়নিক দ্রব্য ও খামার যন্ত্রপাতি থেকে ক্রেটগুলোকে আলাদা রাখতে যাতে জীবাণু দ্বারা সংক্রামিত না হয়। বাইরে খোলা পরিবেশে ক্রেটগুলোক রাখা যাবে না। তাছাড়া ফল বা সবজি পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত প্ল­াস্টিক ক্রেটে কোনোভাবেই সার, কীটনাশক বা অন্য কোনো রাসায়নিক দ্রব্য রাখা যাবে না।
২. আম পরিবহন
পরিবহনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো ফলকে ভালো অবস্থায় সর্বশেষ বাজারে সরবরাহ করা, যেখানে ভোক্তারা এটি কিনবে। সরবরাহ চেইনের বিভিন্ন পয়েন্টে যেমন মাঠ থেকে কালেকশন সেন্টার বা প্যাকহাউস, প্যাকহাউস-কালেকশন সেন্টার থেকে পাইকারি বাজার এবং পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজার।

 

আম পরিবহনের ক্ষেত্রে আম ভর্তি কনটেইনারগুলো সাবধানতার সাথে ওঠানামা করতে হবে। কোনোভাবেই এগুলোকে জোরে ফেলা যাবে না কিংবা একটির ওপর আরেকটি নিক্ষেপ করা যাবে না। গাড়িতে সাজানো বা  স্টেকিংয়ের সময় স্টেকের নিচের কনটেইনারগুলোকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। পরিবহনের ওপর আমের প্যাকেটগুলো এমনভাবে সাজাতে হবে যেন মাঝখানে বায়ু চলাচলের জন্য ফাঁকা জায়গা থাকে। প্রয়োজনে হালকা রঙের ত্রিপল বা কাপড় ব্যবহার করতে হবে, যেগুলো তাপ শোষণ করে না।
ট্রাক থেকে ফল ভর্তি ক্রেট বা প্যাকেট নামানো এবং বাজারের একস্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবহনের কাজে চার চাকার হস্তচালিত টলি ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে খুবই সুবিধাজনক এবং পণ্যের ক্ষতির পরিমাণ অনেক কম হয়। ফল পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত গাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে।
পাইকারি ও খুচরা বাজারে আম হ্যান্ডলিং ব্যবস্থাপনা
পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো মূলত কৃষক, ফড়িয়া ও অন্য বেপারিদের পণ্য কেনাবেচার আউটলেট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কাজেই এসব বাজারে ফল হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে কতগুলো মৌলিক বিষয়ের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে : আমের ক্রেট বা প্যাকেটগুলো গাড়ি থেকে সাবধানতার সাথে নামাতে হবে যেন কোনো প্রকার যান্ত্রিক ক্ষতি না হয়। সর্টিং টেবিলের ওপর রেখে ফলগুলো পুনঃবাছাই করতে হবে এবং ক্ষতযুক্ত ফলগেুলোকে আলাদা করতে হবে। বিশেষ বাজারের চাহিদার প্রতি লক্ষ্যে রেখে ফলের আকার, আকৃতি, বর্ণ ও পরিপক্বতার ওপর ভিত্তি করে আমগুলোকে পুনঃগ্রেডিং করতে হবে। খুচরা বিক্রেতার দোকানে আমগুলোকে পরিষ্কার তাক কিংবা পরিষ্কার পাত্রের মধ্যে রেখে প্রদর্শন করতে হবে। দিনশেষে অবিক্রীত আমগুলো ভালো বায়ু চলাচলযুক্ত ঘরে সংরক্ষণ করতে হবে।

 

সর্বোপরি আম সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনায় উন্নত আম পাড়ার যন্ত্রের (ঠুসি) ব্যবহার, স্টেকিং উপযোগী প্লাস্টিক ক্রেট ব্যবহার, কাচির সাহায্যে যত্নসহকারে বোঁটা কাটা, আধুনিক পদ্ধতিতে কষ অপসারণ এবং গরম পানিতে শোধন করে ট্যাপের পানিতে ঠাণ্ডা করে আমের উপরিভাগের পানি শুকিয়ে সংরক্ষণ করলে আমের সংগ্রহোত্তর অপচয় সহজেই মোকাবেলা করা সম্ভব। (কৃতজ্ঞতা : গত ২৪, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ফসল সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রবন্ধটি লেখা, এজন্য তৎকালীন অতিরিক্ত পরিচালক, কৃষিবিদ কৃষ্ণ চন্দ্র হোড় এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা)।

কৃষিবিদ মোহাইমিনুর রশিদ*

*আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, সিলেট


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon